যীশুর নির্দোষত্ব নিয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ছিল পীলাতের

বাইবেলের নতুন নিয়মের বিবৃতি অনুসারে এটা দেখা যায় যে, পন্টিয়াস পীলাত যীশুকে নির্দোষ বলে মনে করেছিলেন এবং তিনি তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে চান নি। তার এভাবে প্রভাবিত হওয়ার পেছনে অন্যতম একটি কারণ ছিল তার স্ত্রীর দেখা একটি স্বপ্ন। তার স্ত্রী তার কাছে বলে পাঠান যে, যীশু নির্দোষ এবং পীলাতকে তিনি যে বার্তা পাঠিয়েছিলেন তা ছিল, “সেই ধার্মিকের প্রতি তুমি কিছুই করিও না; কারণ, আমি আজ স্বপ্নে তাঁহার জন্য অনেক দুঃখ পাইয়াছি” (মথি ২৭:১৯)।

অবশেষে পীলাত ইহূদিদের দাবিতে সম্মত হন যে, যীশুকে ক্রুশে দেওয়া হোক, কারণ, সেখানে তিনি দাঙ্গা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পেলেন। যাহোক, তিনি তখন এক পাত্র পানি নিয়ে আসতে বললেন এবং তা দিয়ে জনতার সামনে তিনি নিজের হাত ধুয়ে ফেললেন এবং বললেন যে, “এই ধার্মিক ব্যক্তির রক্তপাতের সম্বন্ধে আমি নির্দোষ, তোমরাই তাহা বুঝিবে” (মথি ২৭:২৪)।

যীশুকে রক্ষার পরিকল্পনা

সুসমাচারগুলো বিশ্লেষণ করলে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে, রোমান আইন অনুসারে প্রদত্ত মৃত্যুদণ্ড আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করার ক্ষেত্রে পীলাত তার সাধ্যানুসারে যীশুর জীবন রক্ষার জন্য উৎসাহী ছিলেন। তিনটি বিষয় এক্ষেত্রে লক্ষ করা যায়:

ক্রুশবিদ্ধ করার দিনটি তিনি নির্ধারণ করেছিলেন সাবাথের ঠিক আগে আগেই। কারণ, সাবাথ শুরু হওয়ার পর ক্রুশে কারও দেহ ঝুলিয়ে রাখাটা ইহূদি আইনে সুনির্দিষ্টভাবে নিষেধ করা হয়েছে। আর, ক্রুশে ঝোলানোর ছয় ঘণ্টার মাঝে কারও মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা কম।

যীশু এবং বাকি দু’জনকে যখন ক্রুশ থেকে নামিয়ে আনার সময় হলো তখন ইহূদিরা পীলাতকে বলল যীশুর পায়ের অস্থি ভেঙ্গে দিতে (যোহন ১৯:৩১)। তবে, পীলাতের আজ্ঞাবহ সেঞ্চুরিয়ন বা শতপতি যীশুর পায়ের অস্থি ভঙ্গ করে নি (যোহন ১৯:৩৩)। এসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরেও পীলাতকে যখন বলা হলো যে, যীশু “ইতোমধ্যে মারা গেছে”, তখন তিনি বিস্মিত হলেন (মার্ক ১৫:৪৪)।

রোমান প্রথা অনুসারে, ক্রুশে বিদ্ধকরণের স্থলেই মৃতদেহ ফেলে রাখা হতো, যেন সেখানেই এটি বিনষ্ট হয় ও জীব-জন্তুর খাবারে পরিণত হয়। তবে, এই প্রচলিত পদ্ধতি পরিহার করে, পীলাত এমন কিছু ঘটতে দিলেন যা অত্যন্ত আকর্ষণীয় ছিল। তিনি যীশুকে তার বন্ধুদের কাছে ফিরিয়ে দিলেন, তার শত্রুদের কাছে নয়।