বাগানে প্রার্থনা

যখন এটা প্রতীয়মান হলো যে, তাকে ক্রুশে চড়ানোর বিষয়ে ইহুদীদের শঠতা ও চাতুর্যপূর্ণ পরিকল্পনাএড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই, তখন যীশু ঐকান্তিকভাবে প্রার্থনা করলেন ক্রুশে মৃত্যুর “এই পান-পাত্র দূর” করার জন্য। (মার্ক ১৪:৩৬)

যীশুর পরিপূর্ণ আত্মবিশ্বাস ছিল যে, গেথেসমেনের বাগানে করা তার প্রার্থনাসমূহ গৃহীত হবে। এ বিষয়ে তিনি তার শিষ্যদেরকে বলেছিলেন:

“আর তোমরা প্রার্থনায় বিশ্বাসপূর্বক যাহা কিছু যাঞ্চা করিবে, সে সকলই পাইবে।” (মথি ২১:২২) “যাঞ্চা কর, তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে; অন্বেষণ কর, পাইবে; দ্বারে আঘাত কর, তোমাদের জন্য খুলিয়া দেওয়া যাইবে। কেননা, যে কেহ যাঞ্চা করে, সে গ্রহণ করে; এবং যে অন্বেষণ করে, সে পায়; আর যে আঘাত করে, তাহার জন্য খুলিয়া দেওয়া যাইবে। তোমাদের মধ্যে এমন লোক কে যে, আপনার পুত্র রুটি চাহিলে তাহাকে পাথর দিবে, কিংবা মাছ চাহিলে তাহাকে সাপ দিবে?” (মথি ৭:৭-৯)

ঈশ্বর তার প্রার্থনা কবুল করেছেন

গেথেসমেনের বাগানের প্রার্থনাটি যীশুর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সুমহান প্রার্থনা ছিল, এবং সুসমাচারগুলোতে অত্যন্ত পূর্ণাঙ্গ ও প্রাঞ্জলভাবে এটি বর্ণিত হয়েছে। এটা অভাবনীয় যে, সেই প্রার্থনা ঐশী সিংহাসনে পৌঁছে নি; বিশেষত, যীশু যেখানে তার শিষ্যদেরকে প্রার্থনার শক্তি ও ক্ষমতা সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন। সত্যিই আমাদের অনুমান করার দরকার নেই। সুসমাচারগুলোতে তার প্রার্থনা গৃহীত হওয়ার প্রমাণ রয়েছে। লূকের সুসমাচারে বর্ণিত হয়েছে, স্বর্গ থেকে একজন দূত (ফেরেশ্‌তা) আসেন এবং “তাঁহাকে সবল করিলেন” (লূক ২২:৪৩)। এতে বোঝা যায় যে, ঈশ্বর তার আকুতিপূর্ণ প্রার্থনা শ্রবণ করেছিলেন।

বাগানে তার প্রার্থনার পর, যখন যীশুকে গ্রেপ্তার করা হয়, তার একজন শিষ্য তখন তলোয়ার বের করেন এবং উচ্চ মর্যাদার এক পুরোহিতের এক সেবককে আঘাত করেন এবং তার কান কেটে ফেলেন। যীশু তাকে কঠোরভাবে তিরস্কার করেন এবং বলেন:

“যে সকল লোক খড়গ ধারণ করে, তাহারা খড়গ দ্বারা বিনষ্ট হইবে। আর তুমি কি মনে কর যে, আমি আমার পিতার কাছে বিনতি করিলে তিনি এখনই আমার জন্য হাজার হাজার ফিরিশতা পাঠাইয়া দিবেন না?” (মথি ২৬:৫২ ৫৩)

এটা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, যীশু তখন পরিপূর্ণভাবে সন্তুষ্ট যে, তার প্রার্থনা গৃহীত হয়েছে এবং বাকি সবকিছু এখন ঈশ্বরের হাতে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে এবং সক্রিয়ভাবে আত্ম-রক্ষার কোনো প্রয়োজন নেই। অবশেষে, যখন মৃত্যু আসন্ন হলো এবং তিনি ক্রুশের ওপরে যন্ত্রণায় কাত হলেন, তখন তিনি চিৎকার করলেন, “এলি এলি লামা শাবাক্তানি” (মথি ২৭:৪৫-৪৬)*। কারণ, তিনি এটা আশা করেন নি যে, তার সঙ্গে এটা ঘটতে পারে। তিনি পুরোপুরি বিশ্বাস করেছিলেন যে, তার প্রার্থনা গৃহীত হয়েছিল।