হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মীয় গ্রন্থসমূহের সাক্ষ্য

খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে উত্তর ভারত শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মের জন্যই বৃহৎ কেন্দ্র ছিল না; বৌদ্ধ ধর্মেরও একটি বড় কেন্দ্র ছিল। সে-সব এলাকায় ইসরায়েলীয় যে জনগোষ্ঠীর প্রতি যীশু প্রেরিত হয়েছিলেন, তারা সেখানে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী হিসেবে ইহুদী ধর্মের অনুসরণ করতেন। তবে, তাদের মধ্যে অনেকেই স্থানীয় হিন্দুধর্ম ও বৌদ্ধ-ধর্মেও দীক্ষিত হয়েছিলেন।

এসব ধর্মীয় গ্রন্থের কোনো কোনোটি থেকে যে-সব অঞ্চলে যীশুর পদচারণার চিহ্ন পাওয়া সম্ভব। হিন্দুদের সুপ্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলোকে বলা হয় পুরাণ। সেগুলোর একটি, ভবিষ্য মহা পুরাণে (সংষ্কৃত ভাষায় লিখিত) ভারতের একজন রাজা শালিবাহনের একটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি “ঈসা মসীহ্” (যীশু মসীহ্)-এর সঙ্গে দেখা করেছেন, যিনি একজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং যারা গাত্রবর্ণ গোরা ছিল ও যিনি বিদেশী ছিলেন।

বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলোতে একজন ভবিষ্যৎ বুদ্ধের, বোধিসত্তের, আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে; যার নাম “বাগওয়া মৈত্তেয়”। পালি ভাষায় এর আক্ষরিক অর্থ হলো “গৌর বর্ণের” কিংবা “সাদা ভ্রমণকারী”। মৈত্তেয় এবং “মেসায়া” (মসীহ্) শব্দগুলোর মধ্যকার ব্যুৎপত্তিসংক্রান্ত সাদৃশ্যের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত এবং “মেসায়া” (মসীহ্‌) শব্দের একটি অর্থ হলো “ভ্রমণকারী”।

সেই অঞ্চলে যীশুর ব্যক্তিগত উপস্থিতির কারণে খ্রিস্টধর্মের সূর্য ভারতে উদিত হয়েছিল। সেজন্য যীশুর বহু শিক্ষা বুদ্ধের শিক্ষার সাথে সংমিশ্রিত হয়ে গেছে। এমনকি, নতুন নিয়মে (নিউ টেস্টামেন্ট) বর্ণিত কতিপয় নীতিগর্ভ রূপক-কাহিনী বুদ্ধের প্রতি আরোপিত হয়েছে। যেমন, বপনকারীর রূপক-কাহিনী, যা বৌদ্ধ ধর্মের গ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়।

এটা ধারণা করা হয়ে থাকে যে, কাশ্মীরের সমাধিটিতে শায়িত ইউজ আসফ নামের ব্যক্তিটির নামের এই শব্দ দু’টি উদ্ভূত হয়েছে বুদ্ধ আসফ থেকে, যেভাবে যীশুকে বৌদ্ধদের মন্দিরে ঋষিদের মাঝে স্থান দেওয়া হয়েছে। এভাবে এই শব্দগুলো দিয়ে বোঝায় একজন বুদ্ধকে, যিনি পরীক্ষিত হওয়ার পর পুনরায় লোকদেরকে একত্রিত করেছেন, কিংবা, সত্য ধর্মের অনুসারীদেরকে একত্রিত করেছেন।