ইউফ্রেটিস (ফোরাত)-এর ওপাড়ে

সনাতন ইহূদি ইতিহাস এবং বাইবেলের ভাষ্যমতে এই সেমেটিক লোকগুলোকে বারটি গোত্রে ভাগ করা হয়েছে। যীশুর সময়ে, মাত্র দু’টি গোত্র যীশু যে এলাকায় প্রচার চালাতেন সেখানে বসবাস করতো। এই বিবেচনা করে বাকি দশটি গোত্রের অবস্থান সর্বদাই কিছুটা রহস্যাবৃত ছিল।

দ্বিতীয় শতকের ঐতিহাসিক জোসেফাস তার Antiquities of the Jews বইয়ে লিখেন যে, তার সময়ে বাকি দশটি গোত্র “ফোরাতের ওপাড়ে” ছিল, যা বর্তমান সময়ে ইরাক এবং সেই সময়ে পারস্য সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল, আর পারস্য সাম্রাজ্য তখন ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

এটি আরও উল্লেখযোগ্য যে, প্রাথমিক যুগের চার্চের ইতিহাসে হিব্রু ভাষায় একটি সুসমাচারের অস্তিত্বের দালিলিক প্রমাণ দেখা যায়, যা ভারতে পাওয়া গেছে। সেখানে আরও নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ইসরায়েলীয়রা ভারতে রয়েছে। সেইন্ট জেরোম (৪০০ খ্রীস্টাব্দ) লিখেন যে, দ্বিতীয় শতকের পণ্ডিত প্যান্টেনাস তার ভ্রমণের সময়ে সেই দলিলপত্র হঠাৎ করে দেখার সুযোগ পেয়েছেন। সেইন্ট জেরোম আরও লিখেন যে, তার সমসাময়িক ইসরায়েলীয়রা পারস্য সাম্রাজ্যে বসবাস করা চালিয়ে যাচ্ছিল।

যীশুর মিশন বা ব্রত ছিল বনী ইসরাঈলের হারানো গোত্রগুলোর (বা মেষগুলোর) কাছে পৌঁছুনো, যেভাবে মথি ১৫:২৪ শ্লোকে বলা হয়েছে। তাই এটি তার জন্য অপরিহার্য ও অত্যাবশ্যক ছিল যে, তিনি যেন পূর্বদেশে অভিবাসন করেন।

ব্যাপকভাবে প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ থেকে দেখা যায় যে, আফগানিস্তান, উত্তর-পশ্চিম ভারত (বিশেষত, কাশ্মীর) এবং আশেপাশের এলাকার বনী ইসরাঈলীয় বংশোদ্ভূত লোকজনের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। তাদের বাহ্যিক অবয়ব, ভাষা, লোকগাঁথা, প্রথাসমূহ এবং উৎসব-পার্বন থেকে তাদের ইসরায়েলীয় উত্তরাধিকারের সত্যায়ন মেলে। তারা তাদের গ্রামগুলোর নামকরণ যেভাবে করে, তাদের ভাস্কর্য ও স্মৃতিসৌধগুলোর এবং ঐতিহাসিক কর্মগুলোর নামকরণ যেভাবে করে, সেগুলো থেকেও সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়। ভারতীয় জনগণের ওপরে পরিচালিত কোনো কোনো প্রাথমিক জীনতাত্ত্বিক পরীক্ষণেও তাদের মধ্যপ্রাচ্যে উৎপত্তির বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। আর আজ অবধি তারা নিজেদেরকে ‘বেনে ইসরায়েল’ বা ‘ইসরায়েলের সন্তান’ বলে অভিহিত করে থাকে।