আহত, তবে জীবিত

ক্রুশীয় ঘটনার পর যীশুকে তার নিষ্ঠাবান শিষ্যরা নিজেদের তত্ত্বাবধানে নিয়ে এসে তার সেবা-যত্ন করে। তারা তাকে একটি প্রশস্ত সমাধি-কক্ষে নিয়ে আসে।

কোনো ব্যক্তি যদি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরও রক্ষা পায়, আমরা আশা করবো যে, এ ধরনের ব্যক্তি দৈহিক ক্ষত ও আঘাতগুলোর পরিষ্কার চিহ্ন দেখাবেন। আমরা তার কাছে আশা করবো যে, তিনি চুপিসারে চলাচল করবেন এবং ক্রুশীয় ঘটনার এলাকা থেকে দূরে সরে যাবেন। কারণ, তা না হলে তাকে আবারও গ্রেফতার করার সম্ভাবনা থেকেই যাবে। তার শিষ্যদের মাঝেও তাদের প্রভুর নিরাপত্তা নিয়ে ভীতি ও আশঙ্কার প্রকাশ দেখা যাবে।

সুসমাচারের সাক্ষ্য-প্রমাণ থেকে ঠিক এ রকম উপসংহারেই উপনীত হওয়া যায়।

যীশু তার দেহের আঘাত ও ক্ষত-চিহ্ন থোমার কাছে প্রদর্শন করেন (যোহন ২০:২৫-২৭)। তিনি বোঝান যে, তার কোনো অতিপ্রাকৃত, পুনরুত্থিত দেহ ছিল না; বরং, তা ছিল একজন আঘাত-প্রাপ্ত ব্যক্তির দেহ।

ক্রুশীয় ঘটনাস্থল থেকে তিনি ভ্রমণ করে অতি দ্রুত সরে পড়লেন এবং তিনি শুধুমাত্র তার অতি নিকটতম শিষ্যদের সঙ্গেই দেখা করা মনস্থ করলেন:

“তোমরা যাও, আমার ভ্রাতৃগণকে সংবাদ দাও, যেন তাহারা গালীলে যায়; সেইখানে তাহারা আমাকে দেখিতে পাইবে” (মথি ২৮:১০)।

যীশুর শিষ্যরা এ রকম পর্যায়ের ভয়ই পেয়েছিল যে, তারা সিদ্ধান্ত নিল যে, তারা কবর থেকে যীশুর আত্মপ্রকাশ সম্পর্কে কাউকেই বলবে না (মার্ক ১৬:৮)।

যীশুও তার নিপীড়কদের সামনে দেখা দেন নি কিংবা জেরুজালেমের কেন্দ্রস্থলে ঘুরে বেড়ান নি এবং জনগণকে আহ্বান করেন নি যে, এখন আমাকে গ্রহণ করো পুনরুত্থিত মসীহ্ হিসেবে; যিনি তাদের পাপের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করেছেন।

আমরা যা দেখতে পাই তা হলো, রক্ত-মাংসে গড়া পার্থিব দেহধারী এক ব্যক্তিকে (লূক ২৪:৩৯), যিনি ক্ষুধার যাতনা ভোগ করেছেন (লূক ২৪:৪১) এবং দর্শন থেকে দূরে অবস্থান করেছেন। শিষ্যদেরকে এটা বোঝাতে গিয়ে যে, তিনি সেই একই আঘাত-প্রাপ্ত দেহের অধিকারী, বস্তুত তিনি তাদেরকে দেখান যে, তিনি আদৌ মৃত্যুবরণ করেন নি। কারণ, ঈশ্বর তাকে কঠোর পরীক্ষা থেকে রক্ষা করেছেন ঠিক সেভাবে, যেভাবে ঈশ্বর যোনাহকে জীবিত অবস্থায় মাছের অভ্যন্তর থেকে রক্ষা করেছিলেন।